On Air
Midnight Classic
Home
  • Home
  • শুভ জন্মদিন বাংলাদেশ
Background

শুভ জন্মদিন বাংলাদেশ

16 December 2015 Latest Victory Day


সেদিন ছিলো বৃহস্পতিবার। কিন্তু অন্যান্য যে কোন দিনের চেয়ে সেই বৃহস্পতিবারটি তার নিজ গভীরতায় চিরদিন ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। কারণ- সেটি ছিল ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর।  পৌষের সেই পড়ন্ত বিকেলে তৎকালীন ঢাকার রেসকোর্স ময়দান বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিকেল ৪টা ৩১ মিনিটে পাকিস্তানের সামরিক আইন প্রশাসক জোন-বি এবং ইস্টার্ন কমান্ডের কমান্ডার লে. জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজীর নেতৃত্বে প্রায় ৯১,৬৩৪ পাকিস্তানী সেনা আত্মসমর্পণ করে। মেজর জেনারেল জ্যাকবের তৈরি করা আত্মসমর্পণের দলিলে বিকালে স্বাক্ষর করেন জেনারেল নিয়াজী ও লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা। মুজিবনগর সরকারের পক্ষে এ সময় উপস্থিত ছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার। আর এ আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান ঘটে। জন্ম নেয় নতুন এক মানচিত্র-বাংলাদেশ। ২৬শে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণার পর পরই পাকিস্তানী এবং স্বদেশের দেশবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে বাংলার দামাল মুক্তিযোদ্ধারা তুমুল প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এরপর দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম আর রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে হানাদার বাহিনীকে হটিয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয়, লাল-সবুজ পতাকা স্বীকৃতি পায় বিশ্ব দরবারে।

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম গৌরব ও অহঙ্কারের দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে এ জাতির বীরত্বের আত্মপ্রকাশের আজ ৪৪ তম বার্ষিকী। ১৯৭১ সালের এ দিনে বিশ্বের মানচিত্রে জন্ম হয় স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের। সবুজ-শ্যামল বাংলার মাঝে স্বাধীনতার টকটকে লাল সূর্যকে ধারণ করা পতাকাকে লক্ষ লক্ষ তাজা প্রাণের বিনিময়ে আমরা নিজের করে পাই।

২৬শে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণার পর পরই পাকিস্তানী এবং স্বদেশের দেশবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে বাংলার দামাল মুক্তিযোদ্ধারা তুমুল প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এরপর দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম আর রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে হানাদার বাহিনীকে হটিয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয়, লাল-সবুজ পতাকা স্বীকৃতি পায় বিশ্ব দরবারে। সে সময়ে চিকিৎসক, শিক্ষক, প্রকৌশলী, চলচ্চিত্রকার, অভিনয় শিল্পী, গায়ক, ছাত্র, রেডিও অনুষ্ঠান উপস্থাপক-উপস্থাপিকা সহ প্রত্যেকেই যে যার জায়গা থেকে নিজ নিজ কাজের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ গড়তে অবদান রেখেছিল। আজকের বাংলাদেশের জন্মের পেছনে রেডিও অনুষ্ঠান তথা স্বাধীন-বাংলা বেতার কেন্দ্রের ভুমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অনস্বীকার্য।

আজ সরকারি ছুটির দিন। আজ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। দেশের বড় বড় শহরে প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপ জাতীয় পতাকায় সাজানো হবে। গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হয়। সারা দেশে চলবে আজ বিজয়ের আনন্দ অনুষ্ঠান। ঢাকার বিভিন্ন বিদেশি দূতাবাস ও সংশ্লিষ্ট কার্যালয়গুলোও আজ বিজয় দিবসে বন্ধ থাকবে। বিদেশেও বাংলাদেশী মিশনগুলোয় বিজয় দিবসের কর্মসূচি উদযাপিত হচ্ছে। দেশের জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র, সরকারি-বেসরকারি টিভি চ্যানেল, বাংলাদেশ বেতার ও এফএম রেডিও স্টেশনগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে থাকে। হাসপাতাল, কারাগার ও এতিমখানাগুলোতে উন্নত মানের খাবার দেয়া হবে।

মহান বিজয় দিবসে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরাঙ্গনাদের সম্মান জানাতে আজ সারাদিন জুড়ে পিপলস রেডিও ৯১.৬ এফ.এম এ বিশেষ আয়োজন থাকছে। আজ ভোর ৬টা থেকে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে রাষ্ট্রীয় পুষ্পস্তবক অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে, যেখানে মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তা উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এরপরই সকাল ৯টায় জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ড থেকে বিজয় দিবসের বিশেষ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হবে। এছাড়া দুইজন বীরাঙ্গনাকে নিয়ে বিশেষ নাটিকা প্রচারিত হবে। বিকেল ৩:৩০ মিনিটে বিজয় দিবসের বিশেষ সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আ ফ ম মোজাম্মেল হক। সন্ধ্যে ৬টার পর ৭জন মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকার প্রচারিত হবে। আর সারাদিন চমৎকার সব দেশাত্মবোধক গান আপনি শুনতে পাবেন পিপলস রেডিওতে।

বাংলাদেশের ভূখণ্ডের ভেতরে থাকলেও তারা বাংলাদেশি ছিলেন না- অনেকটা নিজ ভূমে পরবাসী ছিলেন তারা। বলছি সে সকল মানুষের কথা, যারা স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর ও বাংলাদেশী নয়, “ছিটমহল বাসী” নামে পরিচিত ছিল। ছিটমহলের আশপাশে বিজয় দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালন করা হলেও ছিটমহলের বাসিন্দারা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারতেন না। স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের আনন্দ যেমন তাদের আনন্দ দিত না, তেমনি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও শহীদ দিবসের শোকও তাদের স্পর্শ করত না। কারণ, তারা ছিলেন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় ছিটমহলের বাসিন্দা। পরিস্থিতি বদলেছে। বদলেছে জাতীয়তা। ছিটমহল বিলুপ্ত হওয়ায় তারা এখন বাংলাদেশের বাসিন্দা। বাংলাদেশের জাতীয় দিবসগুলো উদযাপন কিংবা পালনের অধিকার রয়েছে তাদের। এবারই প্রথম বিজয় দিবস উদযাপন করবেন বাংলাদেশের এই নতুন নাগরিকরা। ৬৮ বছরের বন্দিদশা কেটে যাওয়ার পর তারা এই প্রথমবারের মতো বিজয় দিবসে নিজ কণ্ঠে গাইবেন “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি”

মাতৃভূমি আমাদের আবেগ-অনুভুতি, হাসি-কান্না, গৌরব সব কিছুতে মিশে আছে। আর নিজ দেশের পতাকা আমাদের সবচেয়ে শান্তি আর নিরাপদ আশ্রয়। প্রত্যেকের জীবনে সব কিছুর উপর থাকে দেশের প্রতি তার ভালবাসা আর সম্মান।

গৌরব মণ্ডিত এই বিজয় দিবস তথা বাংলাদেশের জন্মদিনে পিপলস রেডিও পরিবারের পক্ষ থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের সকল নাগরিককে জানাই ৪৫ বছরে পদার্পণের শুভেচ্ছা। শুভ জন্মদিন প্রিয় ভালবাসার বাংলাদেশ।

Comments

comments


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *