”মিশন কাঞ্চনঞ্জংঘা” সাথে Spark Adventure Club

অনেক জল্পনা কল্পনা করে অবশেষে সন্ধ্যা ৬টার বাসে আমরা রউনা হলাম তেঁতুলিয়ার উদ্দেশ্যে। প্রায় ১৩ ঘন্টার একটা ভ্রমণ, সবাই ক্লান্ত। কিন্তু, বাস থেকে নামার পর সবাইকে দেখলাম এই দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি ভুলে খুব ফুর ফুরে মেজাজেই আছে। আমরা সেখান থেকে একটা ভ্যান ভাড়া করে চলে গেলাম ১০০/১৫০ বছরের পুরানো সরকারি ডাক বাংলোতে। মহানন্দা নদীর পারে এই পুরানো ডাকবাংলো। শান্ত ছায়া সুনিবিড় জায়গা, তেঁতুলিয়ার এই জায়গা থেকে সবচাইতে ভালো ভাবে দেখা যায় কাঞ্চনঞ্জংঘা দেখা যায়। আমাদের ভাগ্য সহায় ছিলোনা। অনেক কুয়াশা থাকায় দেখা যায়নি। আমরা ডাকবাংলোতে ফ্রেস হয়ে বাজারে এলাম নাস্তা করতে। খাবারের দাম খুব বেশি নাহ, মানও ভালই। বাজারের স্পঞ্জ মিষ্টি টা অবশ্যই খাবেন, অসাধারণ তার সাদ। সকাল ১০ টার আগে, আর রাত ৯ টার পরে পাবেন এই মিষ্টি।

সারাদিনের জন্য ভ্যান ভাড়া করলাম। শুরু করলাম বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট দিয়ে। ইমিগ্রেশন পয়েন্টে ভিড় ছিলোনা তেমন একটা। সেখান থেকে টেকনাফের দুরত্ত ৯৯২ কিলোমিটার, ঢাকা ৫০৩ কিলোমিটার। খুব কাছ থেকে কাঞ্চনঞ্জংঘা দেখার আরো একটা জায়গা হচ্ছে বাংলাবান্ধা। তবে তেতুলিয়া থেকে বাংলাবান্ধা যাওয়ার পুরো পথটাই কাঞ্চনঞ্জংঘা দেখার জন্য আদর্শ। পথের দুই পাশে অবারিত সবুজ। ধান গাছ আর প্রকৃতি এই সবুজের উৎস। তো বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট থেকে এবারের গন্তব্য রওশন পুর বা আনন্দপুর। তবে শুক্রবার হওয়ায় নামাজের বিরতি ৩টা পর্যন্ত। তাই এবারে আমরা ছুটলাম ভারতীয় চা বাগান দেখতে। একটা ১ ফুটের নালা দুই দেশকে ভাগ করে রেখেছে। নালার এপারে বাংলাদেশ আর ওপারে ভারত। ভারতের সীমান্ত শুরুই হল চা বাগান দিয়ে। পঞ্চগড় বা তেতুলিয়া চা চাষের জন্য আদর্শ জায়গা। এছাড়া এই অঞ্চল অর্গানিক চা এর জন্য বাংলাদেশে ও বাংলাদেশের বাইরে সুখ্যাতি অর্জন করেছে। সমান্তরাল চা বাগান দেশের একমাত্র এই অঞ্চলেই আছে, তবে আরেকটা আছে জাফলংে। যাইহোক, পঞ্চগড় বা তেঁতুলিয়ার চা দার্জিলিং এর চায়ের সমতুল্য। এসব দেখতে দেখতে আমরা তেঁতুলিয়া বাজারে দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম। সেখান থেকে গেলাম ভারতীয় ব্রিজটা দেখতে। মহানন্দা নদীটা প্রায় একটা খালে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ – ভারতের সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ডে এই নদীর অবস্থান। সেখানে পাথর তোলা দেখতে পারেন। বড় টীউবকে বিশেষ ব্যবস্থায় তারা পাথর বহন করার কাজে ব্যবহার করে। দারুন এক অভিজ্ঞতা। সেইটা দেখতে দেখতে আমাদের এবারের গন্তব্য কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেট। ঐ যে দুপুরে যেতে পারলামনা আনন্দপুর, এখন সেখানেই যাচ্ছি। আর এই আনন্দপুরই হচ্ছে কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেট। অবশ্যই বিকাল ৫ টার মধ্যে যেতে হবে। দুই পাশে চা বাগানের সমুদ্র। সমতলের চা বাগান মানে অসাধারণ এক সবুজ গালিচা। একটা ডেইরী ফার্ম আছে, সেই ফার্ম এর জন্য ঘাসের চাষ করা বিশাল জায়গা জুরে। একটা দারুন রুচি সম্পন্ন বাংলো বাড়ি,নাম আনন্দপুর। সুন্দর সাজানো গোছানো একটা বিশাল জায়গা। খেলার জন্য একটা মাঠ, অনেক গাছ গাছালী। মাঝ দিয়ে বয়ে চলছে ডাহুক নদী। স্বচ্ছ জলের ধারা, নামেই নদী, আসলে খালের মতো সরু। নিরবতা এখানে আপনাকে মোহাবিষ্ট করে রাখবে। পুরো বাংলোর চারপাশে চা বাগান। আপনি যদি কোলাহল পছন্দ না করেন, তাহলে আপনার জন্য এই জায়গা আদর্শ। তবে এখানে প্রবেশ করার জন্য অনুমতি নিতে হয়। আগে ভাগে সেইটা নিয়ে রাখবেন। এসব দেখতে দেখতে চলে বের হলাম মিনা বাজারে মিষ্টি খেতে। সাথে কিনলাম কিছু অর্গানিক চা। দাম বেশি, তবে অর্গানিক বলে কথা। সেখান থেকে সন্ধ্যের ঘুটঘুটে অন্ধকার ভেদ করে আমরা ছূটলাম বাজারে। আমাদের বাস রাত ৭.৩০ মিনিটে। বাজারে গিয়ে খেলাম রসুনের চপ। অদ্ভুত এক খাবার, টেস্ট করতে পারেন। সাদ খারাপ নাহ। আর খেলাম মালাই, পুরাই সেই এক অনুভুতি। তবে দাম দুই দোকানে দুই রকম, সাদ যদিও একি। চিনি কম আর বেশি।

তেঁতুলিয়ার মানুষ খুব অমায়িক। ছায়া ঘেড়া শান্ত রাস্তা, দুই পাশেই সবুজ আর সবুজ। আর সময়লে চা বাগান দেখার এক দারুন অভিজ্ঞতা। এক কথায় অসাধারণ এক ট্যুর। তবে ভালো করে দেখতে চাইলে অবশ্যই এক রাত থেকে নিতে পারেন। সরকারি ডাকবাংলো আর বাজারে একটা হোটেল আছে।

দুজন মানুষকে বিশেষ ধন্যবাদ। ইচ্ছে করেই তাদের ট্যাগ করলাম নাহ। যেন কেউ তাদের বিরক্ত না করে। ধন্যবাদ হাসিব ভাই আর হেলাল ভাই। হাসিব ভাই এর মাদ্ধ্যমে হেলাল ভাইকে পাই। সারাদিন নিজের কাজ বাদ রেখে আমাদের সাথে ছিলেন। আর এইজন্য আমাদের এই ট্যুরটা দারুন হল।

আবারো দেখা হবে বাংলাদেশের শুরুর এই জায়গাটা, তেঁতুলিয়া।

Blog

Song Request






Photo Gallery

4 8 6 15 2 13

Google +

Android

YouTube

apple

pinterest

flickr

Address:

Sadharan Bima Tower (7th floor)
37/A Dilkusha C/A
Dhaka-1000, Bangladesh
Phone: +88 02-7124769, +88 02-7170169
Fax: +88 02-9571677
Mobile: +88 0171 054 875 - 89